পাংশায় কসবামাজাইল ইউপির শাহ মোঃ মকবুল হোসেনের ইন্তেকাল

পাংশায় কসবামাজাইল ইউপির শাহ মোঃ মকবুল হোসেনের ইন্তেকাল

241991687 1021100818726105 6113898038753157028 N

শামিম বিশ্বাস রাজবাড়ীঃ-
রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার স্কুল পরিচালনার কার্যনির্বাহী সদস্য আলহাজ্ব শাহ মোঃ মকবুল হোসেন (৯৩) ইন্তেকাল করেছেন।
উপজেলার কসবামাজাইল ইউপির ভাতশালা গ্রামে নিজ বাড়িতে আজ সকাল ৯ টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
জানা যায় আলহাজ্ব শাহ মোঃ মকবুল হোসেন ঐতিহ্যবাহী কসবা মাজাইল এ.এইচ. হাই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন।
১৯৭৭ থেকে ১৯৯৩ দীর্ঘ ১৬ বছর কসবা মাজাইল এ.এইচ. হাই স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন জনাব শাহ মো. মকবুল হোসেন। রোদ, বৃষ্টি, পানি, কাদা মাড়িয়ে মাটির রাস্তায় কোনোদিন হেঁটে আবার কখনো বাই সাইকেলে ভাতশালা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নিয়মিত প্রতিটি সভা ও অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন। সভাপতির অনুপস্থিতিতে সভায় সভাপতিত্বও করতেন। সভা ও অনুষ্ঠানাদিতেই শুধু নয়, স্কুলের সাধারণ ও নিয়মিত কার্যক্রমেও অংশ নিতেন। স্কুলের সার্বিক উন্নয়নে উনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ।
শাহ মো. মকবুল হোসেন (মকবুল বিশ্বাস নামেই অধিক পরিচিত) ১৯৩০ সালে ভাতশালার বিখ্যাত ও বৃহত্তম শাহ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আজ ৯০ বছর অতিক্রম করেও সক্রিয় আছেন নিজ গ্রামের হেফজখানা পরিচালনাসহ নানাবিধ সামাজিক ও ধর্মীয় কার্যক্রমে।
উনি যখন ৫ম শ্রেণির ছাত্র, তখন তাঁর বাবাকে হারান, পরবর্তী ৫ বছরের মধ্যে বড় ভাইয়ের মৃত্যু ঘটলে একটি বৃহৎ সংসারের দায়িত্ব তাঁকে নিতে হয়। তিনি স্বাস্থ্য সহকারি পদে সরকারি চাকরিতে যোগদান করলেও সংসারিক প্রয়োজনে ৩ বছরের মাথায় চাকরি ছেড়ে এলাকায় ফিরে ব্যবসায় শুরু করেন। বাস্তব কারণেই উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ সম্ভব না হলেও, তাঁর পাঠাভ্যাস এখনও সক্রিয়। ফলে, ধর্ম, রাজনীতি, সমাজ ও সমসাময়িক বিষয়ের অনেককিছুই এই প্রখর স্মৃতিশক্তিসম্পন্ন মানুষটির নখদর্পনে।
উনার ৩ ছেলে শাহ মোঃ রুহুল কবির ১৯৭৯, ইনামুল কবির ও হুমায়ুন কবির ১৯৯০ সালে এই বিদ্যাপীঠ থেকেই মাধ্যমিক পাস করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে তাঁরাও সম্মানজনক পদে কর্মরত আছেন। উনার মেয়েরাও সুশিক্ষিত। শিক্ষার প্রতি উনার গভীর অনুরাগ আমাদের আপ্লুত করে। গ্রামের শিক্ষার্থীদের তিনি এই ৯০ অতিক্রান্ত বয়সে এসেও নানাভাবে উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করেন।
আজ ১৭ সেপ্টেম্বর বাদ আছর তার নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তার তিন ছেলে ও কন্যা সন্তানসহ বহু গুণী আত্মীয়-স্বজন রেখেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Rayhan