পাংশা পাট্টা ইউনিয়নে ০১ কিলো সড়ক এলাকাবাসীর জন্য অভিশাপ

পাংশা পাট্টা ইউনিয়নে ০১ কিলো সড়ক এলাকাবাসীর জন্য অভিশাপ

239398487 1005451890290998 1443193246371974335 N

শামিম বিশ্বাস, রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধিঃ আইডি নংঃ ১০১৫
পাংশা উপজেলার ০৭ নং পাট্টা ইউনিয়নের তেবাড়ীয়ার ব্রীজ পর্যন্ত, রাস্তা এলাকাবাসীর জন্য যেনো অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়ে!
উপজেলার বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও অবকাঠামোর উন্নয়ন হলেও এখনো উপজেলায় কাঁচা রয়ে গেছে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। আর এ কাঁচা রাস্তাগুলো এখন ওই এলাকার গ্রামবাসীর জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চলাচলে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। বর্ষা মৌসুমে রাস্তাগুলো পানি-কাদায় একাকার হয়ে যায়। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় হাঁটু সমান কাদা মাড়িয়ে চলাচল করতে হয় ওইসব গ্রামের হাজারো মানুষের। জুতা হাতে জল-কাদা মাখা শরীরে চলে শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ ।
প্রতিবছর বর্ষার সময় এই কাঁচা সড়কটি কাদায় সয়ালাব হয়ে যায়। রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় ৩-৪ টি গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মৌরাট ইউনিয়ন সহ পাট্টা বাজার, বাহের মোড় বাজার, বাগদুলি বাজার। এখানেই শেষ নয় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীদের। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষের চলাচল।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, শুধুমাত্র যাতায়াতের কারণে এই গ্রামের অনেক ছেলে-মেয়ের বিয়ে হচ্ছেনা।
সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় মানুষের অসুখ-বিসুখ হলে চিকিৎসা নিতে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তা কাদায় ভরে যায় কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এমন কি হেঁটেও চলাচল করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে । গ্রামের একাধিক বাসিন্দা বলেন, বৃষ্টির সময় অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। আবার শুকনো মৌসুমেও রাস্তায় ধুলোর কারণে কাশিসহ নানান অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।
তারা জানান, এই রাস্তা দিয়ে ৩/৪ গ্রামের হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত অথচ রাস্তাটি অভিভাবকহীন। গ্রামে কোন লোক অসুস্থ্য হলে তাকে দুইজন লোকে ধরে বহন করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। কারণ অ্যাম্বুলেন্স যাওয়ার ব্যবস্থা নেই। এমন কি গ্রামে কেউ যদি মারা যায় তার দাফনের কাজ সম্পূর্ণ করতে বেশ কষ্ট ভোগ করতে হয়।
হামুয়াপরা, বিলজানিয়া, পাট্টা এই তিন গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবী জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি মেরামত করতে। কিন্তু কেউ আমলে নিচ্ছেন না। তাছাড়া গ্রামের উৎপাদিত কৃষিপণ্যগুলো রাস্তা খারাপের জন্য সঠিক সময়ে বাজারজাত করা সম্ভব হয় না। এতে করে গ্রামীণ অর্থনীতিতে মারাত্মক ধস নামছে। কৃষক ও ক্ষুদ্র খামারীরা মূলধন হারিয়ে পুনরায় চাষাবাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক অধিবাসী যুবক বলেন, রাস্তাটি এতই খারাপ যে, এই গ্রাম থেকে কেউ বিয়েশাদীর মত সম্পর্ক অন্য এলাকার মানুষ করতে চাইনা। রাস্তার বেহালদশার কারণে মূমুর্ষ রোগীকে সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। প্রায় সময়ই লক্ষ্য করা যায় হাসপাতালে নেওয়ার পূর্বেই রোগী পথেই মারা যাচ্ছে।
তাছাড়া স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া গ্রামের বহু শিক্ষার্থী রয়েছে। পরীক্ষা কিংবা ক্লাসে যোগদান করতে বাড়ি থেকে স্কুল কলেজে যেতে হয়। রাস্তার বেহাল দশার কারণে তারাও প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
এমতবস্থায় এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি। পাকা রাস্তা যদি নাও হয় ইটের সলিং দিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাস্তাটি করার জন্য এলাকাবাসী রাজনীতিবীদ ও উপজেলা প্রশাসনের কছে অনুরোধ জানিয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Rayhan