শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেছেন, এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর দেশের টেকসই উন্নয়নের ধারা চলমান রাখতে বাংলাদেশকে সার্কুলার ইকোনমি মডেল অনুসরণ করে কাজ করতে হবে। এর জন্য যথাযথ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা জরুরি।
ফেডারেশন অভ্ বাংলাদেশ চেম্বারস্ অভ্ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) আয়োজিত “বাংলাদেশে সার্কুলার ইকোনমির বর্তমান অবস্থা : সমস্যা ও সামাধান” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আজ মতিঝিলে এফবিসিসিআই ভবন অডিটোরিয়ামে এ সেমিনার আয়োজন করা হয়। এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মোঃ জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সার্কুলার ইকোনমির গুরুত্ব অনেক। বর্ধিত নগরায়নের সাথে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে। শিল্প বর্জ্য, মেডিকেল বর্জ্য, প্রাণিজ বর্জ্যসহ বিভিন্ন রাসায়নিক বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে বায়ু, পানি, মাটি ইত্যাদি। এর প্রভাব পড়ছে জীববৈচিত্র্যের ওপর। পড়ছে জলবায়ুর ওপর প্রতিকূল প্রভাব। জলবায়ু পরিবর্তনে বিভিন্ন প্রাণীর জটিল ও কঠিন রোগ দেখা দিচ্ছে। পরিবেশের ওপর জলবায়ুর প্রভাবের জন্য ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত, খাদ্যাভাবজনিত রোগসহ নানা জটিল ও অপরিচিত রোগ দেখা দিচ্ছে।
শিল্পমন্ত্রী আরো বলেন, সম্প্রতি ফেলে দেওয়া ব্যাটারি, মুঠোফোন, কম্পিউটার, টেলিভিশনসহ ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম (ই-বর্জ্য) থেকে পরিবেশ দূষণের ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ২০১৮ সালে একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে বছরে ৪ লাখ টন ইলেকট্রনিকস বর্জ্য জমা হয়। এর মধ্যে কেবল ৩ শতাংশ রিসাইক্লিং শিল্পে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি আমরা দেখতে পেয়েছি ২০২০ সালে জাপান অলিম্পিকে ই-বর্জ্য ব্যবহার করে তৈরি করে অলিম্পিকের পদক। বাংলাদেশকেও ইলেক্ট্রনিক বর্জ্যের মধ্যে মূল্যবান ধাতু পুনরায় কাজে লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেন, দেশে “সার্কুলার ইকোনমি বা বৃত্তাকার অর্থনীতি” বাস্তবায়ন হলে ভূগর্ভস্থ ও ভূ-উপরিস্থ সম্পদ আহরণের পরিমাণ হ্রাস পাবে, কাঁচামালের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত হবে, সম্পদের অপচয় কমবে, প্রক্রিয়া চলাকালীন উৎপন্ন বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস পাবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু পরিবর্তনে দায়ী গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমণের পরিমাণ হ্রাস করা সম্ভব হবে।