করোনা ভাইরাসের কারণে দেশব্যাপী চলছে লকডাউন। বন্ধ রয়েছে যানবাহনসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। লকডাউনের কারণে স্বাভাবিক ভাবে গন্তব্যে যেতে পারছে না গাইবান্ধার সাত উপজেলার শ্রমজীবী মানুষ। এতে কৃষক, কৃষি শ্রমিক, রিক্সা চালক, ফুটপাতের ব্যবসায়ীসহ অনেকে পড়েছে বিপাকে। এতে করে দিনআনা দিন খাওয়া মানুষরা অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। প্রতিবছর বোরো মৌসুমে পরিবারের সদস্যদের মুখের আহার জোগাতে গাইবান্ধা থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিল ও হাওর এলাকায় ধান কাটতে যায় কৃষি শ্রমিকগণ। করোনায় বসে না থেকে এবারো তারা যাচ্ছে ধান কাটতে। ১৮ এপ্রিল রবিবার গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের উজান তেওড়া গ্রামের ৪০জন কৃষি শ্রমিক একটি ট্রাকে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার রনবাঘা এলাকার উদ্দেশ্যে কাজে যাচ্ছিলো। পথে তারা পুলিশের হাতে আটক হলে বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম নির্দেশে জেলা পুলিশের উদ্যোগে একটি বাসে বগুড়ায় ধান কাটার জন্য প্রেরণের ব্যবস্থা করেন গাইবান্ধা ট্রাফিক ইনচার্জ নূর আলম সিদ্দিক।
সুন্দরগঞ্জের কৃষি শ্রমিক হাসান আলী বলেন, প্রতিবছর আমরা ধান কাটার জন্য বগুড়ার নন্দীগ্রাম থানার রনবাঘা গ্রামে যাই। জমির মালিক জাহিদুল আমাদেরকে কল করে নিয়ে যায়। আমরা প্রায় ৪০জন কৃষক ধান কাটার উদ্দেশ্যে যাচ্ছি। জনপ্রতি আমরা প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে পারিশ্রমিক পেয়েছি। আশাকরি এবারো তাই পাবো। করোনা স¤পর্কে কথা বললে তিনি বলেন, আমাদের চরে বিদ্যুৎ নাই। টিভি নাই। তাই আমরা জানিনা করোনায় প্রশাসন এত নিয়ম করেছে। গৃহস্ত আমাদের ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে পুলিশ আমাদের বাধা দেয় এবং পরে বাসযোগে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ধান কাটার মোৗসুম শুরু হয়েছে। এ সময় অনেক ধান কাটা শ্রমিক দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ধান কাটতে যায়। নওগাঁ, বগুড়া, মৌলভিবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। গত বছরও করোনার সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদেরকে আমরা বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়েছি। গতবারের মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদেরকে মাস্ক দিয়ে বাসের মাধ্যমে ধান কাটা এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পেলেও এটি অব্যাহত থাকবে।