ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাসেবা চরম সংকটাপন্ন

ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাসেবা চরম সংকটাপন্ন

243359016 4153415548102741 4636644624546706892 N

সুমন রেয়াজী, জেলা প্রতিনিধি,নীলফামারী,আইডি ৪৪২ : নীলফামারীর ডোমার উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় জনবল সংকটের কারণে রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা প্রদান সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া আল্টাসাউন্ড মেশিন প্রয়োজনীয় কাচাঁমাল ও বিদ্যুৎ সমস্যার কারনে বন্ধ রয়েছে। হাসপাতালের নিজস্ব জেনারেটর বসানো হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। শুধুমাত্র এক্সরে মেশিন চালু রয়েছে । অন্যান্য চিকিৎসার সরঞ্জাম থাকার পরেও টেকনিশিয়ান না থাকায় তা চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
ডোমার হাসপাতালের জন্য অনুমোদিত ডাক্তারের পদ সংখ্যা ২১ টি হলেও কর্মরত মাত্র ৯ জন,বাকী ১২টি শুন্য পদগুলো, জুনিয়র কনসালটেন্ট (এ্যানেসথেসিয়া)জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু),জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থপেডিকস),জুনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিওলজী),জুনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু), জুনিয়র কনসালটেন্ট(ইএনটি),জুনিয়র কনসালটেন্ট (চর্ম ও যৌনরোগ), জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারী),জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন),আবাসিক মেডিকেল অফিসার, ইনডোর মেডিকেল অফিসার, ইমারজেন্সী মেডিকেল অফিসার। এছাড়াও উপজেলার ১০ টি উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১০ টি মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও ৩ টি পদ শূন্য রয়েছে, ৭ জন কর্মরত ডাক্তারের মধ্যে ৪ জনেই রয়েছে প্রেষনে। চিলাহাটি উপ- স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ তাবাসসুম মাহজাবীন, প্রেষনে নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতাল,গোমনাতী উপ- স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ অসীম রায় চৌধুরী, প্রেষনে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতাল,বামুনিয়া উপ- স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ রোখসানা আফরোজ লুনা, মাতৃত্ব কালীন ছুটি, মির্জাগন্জ উপ -স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ তানভীর জোহা প্রেষনে -ঢাকা করোনা হাসপাতাল, পাঙ্গা উপ -স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ এস,এম,রবিউল ইসলাম, প্রেষনে-সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে,সোনারায় উপ- স্বাস্থ্য কেন্দ্র,হরিণচড়া উপ- স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ও বোড়াগাড়ী উপ- স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ৩ মেডিকেল অফিসার পদ শূন্য রয়েছে।ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্সের পদ ৩৩ টি যার মধ্যে ১১ টি পদেই শূন্য, কর্মরত ১৯ টি পদের মধ্যে সিনিয়র স্টাফ নার্স ২ জন প্রেষনে, সিনিয়র স্টাফ নার্স(মিডওয়াইফারী) ৮ জনের মধ্যে সকলেই প্রেষনে আছে কর্মরত মাত্র ৯ জন নার্স দিয়ে চলছে হাসপাতাল, নার্স সংকটের ফলে হাসপাতালের নতুন প্রসূতি ওয়ার্ড এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি। তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারীর ৯৬ টি পদের মধ্যে ৩৫ টিই শূন্য। চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর ৩৫ টি পদের ১৯ টি পদেই শূন্য রয়েছে। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ৩০ কিলোমিটার দূরে জেলা সদর থেকে ডাক্তাররা কর্মস্থলে এসে থাকেন। এতে করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না এখানকার জনগণ। ইউনিয়ন পর্যায়ে স্থাপিত ১০টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অবস্থা খুবই করুন। যা প্রায় দিনই বন্ধ অবস্থায় থাকে,ডাক্তার না থাকায় সেবা পাচ্ছে না মানুষজন।
২৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু থাকলেও এতে কর্মরত সিএইচসিপি’দের উপস্থিতি ও প্রস্থান নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলি খোলা রাখার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে তা করা হয় না। প্রতিদিন ইনডোরে ৭০/৮০জন রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়। এছাড়া আউটডোরে ২/৩শত রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে।
এছাড়া হাসপাতালের জন্য বিদ্যুতের যে লোড প্রয়োজন তা এই লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ সম্ভব নয়। ফলে প্রায় সময়ই হাসপাতাল এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে না। এতে রোগীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ রায়হান বারী, জানান হাসপাতালে তৃতীয় ও চর্তুথ শ্রেনীর কর্মচারীর তীব্র সংকট যার ফলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছে, আম হাসপাতালের জনবল সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন বিষয়টি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানিয়েছি আশা করি সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান হবে। আমি
উপজেলা স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে প্রতি মাসে স্বাস্থ্য সেবা কমিটির সভা করে এখানকার স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেের বিষয়ে নীলফামারী সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর কবির বলেন ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুন্য পদগুলো নিয়োগ দেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে,ডাক্তার-নার্স যারা প্রেষনে আছেন তাদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। অপারেশন থিয়েটার ও আল্টাসাউন্ড মেশিন দ্রুত চালু করা হবে বলে জানান।
ডোমার উপজেলাবাসী ডোমার হাসপাতালের ডাক্তার -নার্স ও কর্মচারী সংকটের দ্রুত নিরসনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Rayhan